-ডাঃ নেভেল ডিঃ রোজারিও
পূণ্য পিতা পোপ
ষোড়শ বেনেডিক্ট, প্রথম বাঙ্গালী আর্চবিশপ
টি,এ, গাঙ্গুলী সিএসসিকে ধন্যশ্রেণীভুক্ত
হবার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে 'ঈশ্বরের
সেবক' হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ইতিহাসে
কোন বাঙ্গালীকে ধন্যশ্রেণীভুক্তকরণ এটাই প্রথম।
আজ থেকে ৩৮ বছর
আগে আকস্মিক হৃদ-ক্রিয়া বন্ধ
হয়ে মারা যান বাংলাদেশ
মন্ডলীর প্রাণপুরূষ আর্চবিশপ টি,এ, গাঙ্গুলী
সিএসসি। তাঁর
সেদিনের আকস্মিক তিরোধানে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের
তাবৎ মন্ডলী। প্রিয়
ব্যক্তিত্ত্বের ইহলোক থেকে আকস্মিক
বিদায় কাথলিক মন্ডলীর আমাদের
সবাইকে সেদিন মান্ডলিক অভিভাবক
ও প্রগতি শূণ্যতায় ভারাক্রাšত করে
ফেলেছিল। কেননা
জাতি, সম্প্রদায় ও
মন্ডলীর সবার প্রগতি
ও মঙ্গল কামনায় জীবনভর
সাধনা করেছেন প্রয়াত আর্চবিশপ
টি,এ, গাঙ্গুলী সিএসসি
। তাঁর
সাধনার ফল্গুধারায় আমাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক
ও মান্ডলিক জীবন আজ ফলে
ফুলে বিকশিত। ব্যক্তিগত
ভাবে তো বটেই সামাজিক
ও মান্ডলিক বেশ কিছু কর্মকান্ডে, খ্রীষ্টভক্তদের যে কোন প্রয়োজনে
তাঁর সহযোগিতা , সহমর্মীতা চিরস্বরণীয়
হয়ে থাকবে যুগ থেকে
যুগান্তরে--- প্রজন্ম থেকে
প্রজন্মান্তরে।
রমণা গির্জায় সে সময়কায় অনুষ্ঠিত
তাঁর অন্ত্যষ্টিক্রিয়ায় হিন্দু
, মুসলমান, বেীদ্ধ, খ্রীষ্টান ধর্মনির্বিশেষে শোকে মুহ্যমান লাখো
মানুষের নেমেছিল ঢল। ঠিক তেমনি ভাবে
তাঁর ২৯তম মৃত্যু বার্ষিকীতে
রমণা ক্যাড্রিালে যখন আয়োজন করা
হ’ল তাঁকে 'ঈশ্বরের
সেবক' ঘোষণার, তখন কোন প্রকার
আমন্ত্রণ ছাড়াই ঝড় বৃষ্টিকে
উপেক্ষা করে
সেদিন নেমেছিল উপ্চে পড়া মানুষের
ঢল। এটাই
স্বাভাবিক। কেননা
তিনি যে তাঁর অগণিত
ভক্ত শুভানুধ্যায়ীর ভালবাসায় সিক্ত হয়ে আছেন। তাঁর
তিরোধানের পর থেকেই লাখো
লাখো ভক্তের হৃদয়ে তিনি
বেঁচে আছেন চিরকাল, আর
তাদের ভালবাসায় সিক্ত হবেন আরও
অনšতকাল ধরে।
ইতিহাসের
পাতায় যে সব বিরল
ব্যক্তিত্ব তাঁদের কর্মপ্রচেষ্টায় বাংলাদেশের
খ্রীষ্টভক্ত এবং জনগণের কাছে
অমর হয়ে আছেন আর্চবিশপ
থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলী সিএসসি
তাঁদের অন্যতম। আমার
সেীভাগ্য হয়েছিল স্কুলের ছাত্র
থাকাকালীন সময় থেকে এ
মহান ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্যে আসার। আরও
সুযোগ হয়েছিল কলেজ জীবনে
সুহৃদ সংঘ, খ্রীষ্টান ছাত্রকল্যাণ
সংঘ সহ বিভিন্ন যুব-ছাত্র আন্দোলনে জড়িত
থাকাকালে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে
তাঁর কাছে যাবার।
তাঁকে চিনেছি ছাত্রজীবনে,---স্বাধীকার
আন্দোলনের উনসত্তুরের উত্তাল সে দিনগুলোতে,----
মহান মুক্তিযুদ্ধের প্র্স্তুুতি পর্বে-- মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে, ---- মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বিধ্ব¯ত বাংলাদেশ
পুর্ণগঠনে ----- বিশ শতকের মধ্য
ষাট থেকে সত্তর শতকের
শেষাংশ পর্যন্ত। ছাত্র ও
যুবক অবস্থায় অনেকের মতোই আমিও
ছিলাম তাঁর সাথে অচ্ছেদ্য
বন্ধনে। আমার
সে সব পুরোনো স্মৃতিকে
সম্বল করে আমি আজকের
এ শুভক্ষণে আমার ছোট্ট ক্যানভাসে
চিত্রিত করার চেষ্টা করবো
ছাত্র-যুবসহ সাধারণ খ্রীষ্টভদের
আর্চবিশপ গাঙ্গুলীকে। আর্চবিশপ
মহোদয়ের জাতীয়, মান্ডলিক ও
ব্যক্তিগত স্মৃতিগুলো আমার কাছে একাকার
হয়ে গেছে বলেই ব্যক্তিগত এ স্মৃতিচারণ রোমন্থনের
জন্যে পাঠকের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি
শুরূতেই।
ষাটের দশকের শেষের
দিকে তৎকালীন পূর্ব -পাকিস্তানের
আপামর জনসাধারণ যখন বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদে
উদ্ধুদ্ধ হয়ে স্বাধিকার অর্জনের আন্দোলনে
ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তখন তার
প্রতিফলনও পড়ে ঢাকার তৎকালীন
ক্ষুদ্র খ্রীষ্টান যুব ও ছাত্রদের
মাঝে। খ্রীষ্টান
সমাজকে এদেশের মাটিতে প্রোথিত
করে এদেশেরই বৃহত্তর জনগণের সাথে সম্পূক্ত
করার সৎ সাহস নিয়ে
এগিয়ে আসে তখনকার খ্রীষ্টান
যুব ও ছাত্র সমাজ। সুহৃদ
সংঘ, ত্রিবেণী ছাত্রকল্যাণ
সংঘ, খ্রীষ্টান
ছাত্রকল্যাণ সংঘ, বাংলাদেশ সহ দেশের
বিভিন্ন
স্থানে গড়ে
উঠতে থাকে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদে
উদ্ধুদ্ধ খ্রীষ্টান যুব ও ছাত্র
সংগঠন সমূহ।
খ্রীষ্টান
যুব সম্প্রদায় এবং ছাত্র-ছাত্রীরা
অনুভব করে যে, নিজেরা
সংঘবদ্ধ হয়ে সমাজকল্যাণ , সমাজসেবা
ও সমাজ-সংস্কারমূলক কাজে
এগিয়ে আসার জন্যে একটা
খ্রীষ্টান যুব সংগঠন থাকা
আবশ্যক, যেখানে খ্রীষ্টিয় আদর্শ
ও ভ্রাতৃত্ববোধের প্রতিফলনের পাশাপাশি গড়ে তোলা যাবে
জাতীয় চেতনাবোধ। সামাজিক
অন্যায়- অবিচার রোধের পাশাপাশি
রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় অধিকার আদায়ের দাবীতে
খ্রীষ্টান ছাত্র সমাজ হতে
পারবে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদী। ১৯৬৯
সনের লক্ষীবাজারে গড়ে উঠে ঢাকার
খ্রীষ্টান যুব প্রতিষ্ঠান সুহৃদ
সংঘ। ১৯শে
এপ্রিল ১৯৭০ সালে আহুত
সাধারণ সভায় প্রস্তাবিত শাসনতন্ত্র
অনুমোদনের মাধ্যমে জম্ম নেয় আজকের
খ্রীষ্টান ছাত্রকল্যাণ সংঘ,বাংলাদেশ।
দ’ুমাসব্যাপী এড্-হক কমিটির
সব সভা এবং পরবর্তিতে
গঠিত কার্যকরী পরিয়দের সব সভা রমনা
আর্চবিশপ হাউজের পার্লারে অনুষ্ঠানের
শুধু অনুমতি নয়, বরং
প্রতিটি সভায় আমরা আপ্যায়িত
হ’বার যেন তাঁর
একটি অলিখিত নির্দেশও ছিল।
ষাটের দশকের শেষ ভাগে
এবং সত্তরের প্রথম ভাগে
গড়ে ওঠা এ সব
যুব ও ছাত্র সংগঠন
গড়ে ওঠার ব্যাপারে তখনকার
আর্চবিশপ টি,এ, গাঙ্গুলীর
মনোভাব এবং সাহায্য সহযোগিতা
ছিল আশাতীত ও স্মরণীয়।
মানবিক গুণের অধিকারী ছাত্রসুহৃদ
আর্চবিশপ
প্রকৃত
ধর্মভিত্তিক নৈতিকতার সঙ্গে আর্চবিশপ গাঙ্গুলীর
ছিল নিবিঢ় সর্ম্পক।
তাঁর বাইরের পোষাকী আবরণটি
ধর্মীয় লেবাসে আবৃত হলেও
ভেতরটা ছিল প্রগতিশীলতার কন্ঠস্বরে
ভরা, মুক্তচিšতা ও বিজ্ঞানভিত্তিক
নৈতিকতাবোধের দ্বারা চালিত আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক
পরিমন্ডলের পরিবর্তনের ক্ষেত্র রচনার ঝান্ডা সমুন্নত
রাখার দিক-নির্দেশনাময়।
সুঠামদেহী
মাঝারি আকারের হালকা পাতলা
গড়নের মানুষ ছিলেন আর্চবিশপ
গাঙ্গুলী কিন্তু তাঁর হাসিটি
ছিল বিরাট। কোনদিন
কাউকে ধমক দিয়ে কথা
বলতে শোনেনি কেহ তাঁকে। অথচ
তাঁর ব্যক্তিত্ব ছিল অত্যন্ত সবল। স্বল্পভাষী
কিন্তু বহূভাষাবিদ , সুলেখক, সুগায়ক ও সুবক্তা আর্চবিশপ
গাঙ্গুলী সৎপথে থেকে একটা
আর্দশ এবং লক্ষ্যের ভিত্তিতে
পথ চলা পছন্দ করতেন। বাঙ্গালী
যাজকদের মধ্যে প্রথম পিএইচডি
ডিগ্রীধারী বিনয়ী আর্চবিশপ গাঙ্গুলী
ছিলেন ছাত্র-ছাত্রীদের অতি
প্রিয়। আজীবন
ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যাণ কামনায় উদ্গ্রীব
ছিলেন আর্চবিশপ গাঙ্গুলী। তিনি
নটরডেম কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবেও
দক্ষতা, সুনাম ও সম্মান
অর্জন করেন। আর্চবিশপ
গাঙ্গুলী একজন
বিজ্ঞ , দূরদর্শী চিšতাবিদ ও
নিরলস কর্মী ছিলেন।
দূরদৃষ্টি ছিল বলেই তিনি
একজন আর্দশ, মানবিক মূল্যবোধের
মহান ব্যক্তিত্ব হিসেবে আজও চিহ্নিত
হয়ে আছেন। তাঁর
কাছে যারাই যেত উনি
তাদের কথা বি¯তারিত
শুনতেন, আলোচনা করতেন, সুখ-সুবিধা দেখতেন, অসুবিধাগুলো
অনুধাবন করার চেষ্টা করতেন
--- সর্বোপরি যেখানে যা প্রয়োজন
সেখানে সে পরামর্শ ও
নির্দেশ দিতেন। আর্চবিশপ গাঙ্গুলীর ব্যক্তিত্বের মধ্যে এমন একটি
বিশেষত্ব ছিল যে তাঁর
সাহচর্যে আসা ছাত্র-ছাত্রী,
সহকর্মী, অনুরাগী,এমনকি বিরাগী নির্বিশেষে
সবাইকে চমৎকিত করতে পারতেন। আর্চবিশপ
গাঙ্গুলীর মধ্যে সব সময়
একটি প্রচন্ড ইতিবাচক মোহনীয় আকর্ষণ ছিল,
যা তাঁকে মহীয়ান করে
রেখেছে মৃত্যুর এত বছর পরেও। তিনি
আজ এত বছর পরেও
অমর হয়ে আছেন তাঁর কর্ম ও
কীর্তির মধ্য দিয়ে।
সর্বগুণে গুণবান আর্চবিশপ গাঙ্গুলীর
মানব সেবার আর্দশ যুগ
যুগ ধরে অনুপ্রেরণা দিয়ে
যাবে অনাগত দিনের মানুষকে।
খ্রীষ্টান ছাত্রাবাস ছাত্রকল্যাণ সংঘের আন্দোলন ও
আর্চবিশপ
নটরডেম
কলেজের খ্রীষ্টান ছাত্রাবাসে ঢাকা শহরের বাইরের
ছাত্ররা থাকতো। ১৯৭৩
সনে এ
ছাত্রাবাস হঠাৎ করে বন্ধ
করে সবাইকে অমানবিকভাবে রা¯তায় বের করে
দেয়ার প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সম¯ত খ্রীষ্টান সমাজে
এবং খ্রীষ্টান ছাত্রকল্যাণ সংঘে। চাপা
বিক্ষোভে ও প্রতিবাদে ফেটে
পড়লো ছাত্রকল্যাণ সংঘ। ১৯৭৫ সনে ছাত্রকল্যাণ
প্রকাশ করে তার মাসিক
মুখপত্র অনল। অনলের
জন্মলগ্ন থেকেই প্রতিটি সংখ্যায়
প্রাধান্য পেতে থাকে খ্রীষ্টান
ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাণের দাবী হোস্টেল সমস্যা। ’৭৫-এর এপ্রিলের প্রথম
সপ্তাহে ত্রিবেণী ছাত্র কল্যাণ সংঘের
বার্ষিক সাধারণ সভায় খ্রীষ্টান
ছাত্রকল্যাণের তৎকালীন সভাপতি নেভেল ডিঃ
রোজারিও এর ’’এবার আর
এককভাবে নয় ----- আসুন সমবেতভাবে হোষ্টেল
সমস্যার সমাধান করি’’র
আহ্বানে ১৩ই এপ্রিল ছাত্রকল্যাণ
সংঘের সভাপতি নেভেল ডিঃ
রোজারিওকে আহ্বায়ক করে বিভিন্ন সংঘ
সমিতির সমন্বয়ে গঠন করা হয়
’সম্মিলিত (সর্বদলীয়ভাবে) হোষ্টেল বাস্তবায়ন কমিটি।(অনল
ঃ ১ম বর্ষ ঃঃ
২য় সংখ্যা)।
সর্বদলীয়
হোষ্টেল বাস্তবায়ন কমিটির
বিভিন্ন পদক্ষেপের পাশাপাশি অনলের তৃতীয় সংখ্যায়
হোষ্টেল ইস্যুটাকে সামনে রেখে সুবল
এল, আর আঁকলো কার্টুন
---- গাধার পিঠে লম্বা নাকওয়ালা
মানুষের নাগালের বাইরে নাকের ডগায়
বাঁধা মূলো। ভাবখানা
এই যে, নাগালবিহীন মূলোরূপী
খ্রীষ্টান ছাত্রাবাস এর প্রত্যাশায় গাধারুপী
ছাত্র-ছাত্রী ধাবমান থাকবে
অনাদিকাল পর্যšত।
হয়তো দারুন কটাক্ষ ছিলো
সে কার্টুনে কিন্তু সে সময়কার
ছাত্র-ছাত্রীদের মনের কথাই প্রতিফলিত
হয়েছিল সে সংখ্যার সে
অনলে। কটাক্ষ
ছিলো প্রচন্ড--- তাই সবাইকে মহল
বিশেষের কাছ থেকে যথেষ্ট
তিরস্কার ও ধমক সহ্য
করতে হয়েছিল। অথচ
সে কার্টুনটি নিয়ে সবচেয়ে বেশী
যার প্রতিক্রিয়া জানানোর কথা, সে ধর্মাধ্যক্ষ
আর্চবিশপ গাঙ্গুলীর ছিল না কোন
ক্ষোভ, প্রকাশ পেল না
কোন আক্রোশ। বরং
ক্ষমাশীল প্রভুর মত ছাত্র-ছাত্রীদের মঙ্গল কামনায় একই
বছর মোহাম্মদপুরে আর্চ-ডায়োসিসের জমি
ছাত্রদের হোষ্টেলের জন্যে দান করে
গেলেন। পর্যায়ক্রমে
ঢাকায় ছাত্রী হোষ্টেল নির্মাণের
চিন্তাও করেছিলেন তিনি।
হোষ্টেল
কমিটি, সর্বদলীয় হোষ্টেল বা¯তবায়ন কমিটি
ও সাধারণ খ্রীষ্টভক্তদের দাবী
এবং ছাত্রদের কল্যাণের কথা চিন্তা করে
’৭৫ সনের ১ম শিক্ষা
ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ ’৭৫ (প্রতিভার অন্বেষণ)
অনুষ্ঠানের শেষদিন পুরষ্কার বিতরণী
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে
দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পন্ডিত শ্রদ্ধের আর্চবিশপ
গাঙ্গুলী ঘোষণা দেন, ‘‘ মোহাম্মদপুরে
যে ডায়োসিসের সম্পত্তি রয়েছে সেখানে ছেলেদের
জন্য হোষ্টেল করে দেয়া হবে”
। প্রভু আর্চবিশপ
তাঁর ভাষণে ছেলেদের জমি
দেওয়ার কথা বলেন।
(প্রতিবেশী রিপোর্ট , ২৬ শে অক্টোবর,
১৯৭৫)।
এ ঘোষণার পরেও এ
কাজে বিদেশী দাতা না
পাওয়াতে আর্চবিশপ গাঙ্গুলী তাঁর জীবদ্দশায় এ
হোষ্টেলের নির্মাণ কাজে এগুতে পারেননি। ছাত্রদের
হোষ্টেলের জন্যে তিনি অনলস
ও অব্যাহত ভাবে বিভিন্ন দাতাদের
সাথে যোগাযোগ করতে থাকেন।
পাশাপাশি ছাত্রদের এ আবাসন সমস্যার জন্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
তৎকালীন শিক্ষক ডঃ বেনেডিক্ট
গমেজ, আলেকজান্ডার রোজারিও, নিকোলাস গমেজ প্রমুখদের নিয়ে
গঠিত হোষ্টেল কমিটি মারফত ভাড়া
করা হোষ্টেলে আর্থিকসহ সার্বিক সহযোগিতা দেন। আর্চবিশপ
মহোদয়ের আন্তরিক চেষ্টা স্বত্ত্বেও কোন
বিদেশী অনুদান না পাওয়াতে
সর্বদলীয় হোষ্টেল বান্তবায়ন কমিটি স্থানীয়ভাবে অর্থ
সংগ্রহ করে হোষ্টেল নির্মাণের
পরিকল্পনা আর্চবিশপ মহোদয়ের নিকট উপস্থাপন করে। পরিকল্পনায়
বছরের একটি বিশেষ রোববারকে
ছাত্র দিবস হিসেবে ঘোষণা
দিয়ে বাংলাদেশের সমস্ত গীর্জায়
সংগৃহীত রবিবাসরীয় দানের সঙ্গে বিশেষ
দান সংগ্রহের পাশাপাশি বিভিন্ন খ্রীষ্টিয় প্রতিষ্ঠান, বিত্তবান লোকদের
কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহ
করার প্রস্তাব করা
হয়। আর্চবিশপ
মহোদয় তখনকার ৪ ডায়োসিসের
বিশপদের সভায় তা আলোচনার
আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে
বিশপ সম্মেলনে ঢাকার বাইরের এক
ডায়োসিসের বিশপের আপত্তি ও
অনাগ্রহের কারণে তা আর
হয়ে উঠেনি। (চলবে)
No comments:
Post a Comment